ঢাকা, বাংলাদেশ ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

অভিবাসন দিবসে সাপ্তাহিক প্রবাসনের আলোচনা সভায় আরিফুর রহমান

অনলাইন ব্যবস্থায় বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে রাবিড কাজ করছে

অনলাইন ব্যবস্থায় বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে রাবিড কাজ করছে

ছবি প্রবাসন নিউজ

Publish : 02:38 AM, 21 December 2024.
প্রবাসন প্রতিবেদন :

বিনা খরছে আগেও কর্মীরা বিদেশে গেছে, ভবিষ্যতেও যাবে। ভিসা ট্রেডিং এর কারণে অভিবাসন ব্যয় বেড়ে গেছে। সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবস্থায় বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে রাবিড কাজ করছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবসে সাপ্তাহিক প্রবাসনের উদ্যোগে ১৮ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাবিড সভাপতি আরিফুর রহমান এই কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এই সেক্টরের বিভিন্ন অংশীজন আছে, তাদের সবাইকে নিয়েই মাইগ্রেশন সেক্টর। তাই তাদের সবার জন্যই এই দিবস। অনেক দিন থেকে বিচ্ছিভাবে এই দিবস পালন করা হয়ে আসছে গতানুগতিকভাবে। যে কারণে আজকে আমরা রিক্রুটিং এজেন্সির যে মালিক আছেন তাদের প্রতিনিধি, ট্রেনিং সেন্টারের মালিকদের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি এবং মেডিকেল সেন্টারের মালিকদের প্রতিনিধিদের রাখার জন্য চেষ্টা করেছি।’

তিরি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে এই সেক্টর, অথচ এই সেক্টর সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। এই সেক্টরের মূল যে অংশিদার তারা হলেন অভিবাসী কর্মী, তারা প্রতি পদে পদে অবহেলিত, বাংলাদেশ থেকে যেসব কর্মী যায়, তারা প্রতি পদে পদে হয়রাণির শিকার হয়  অত্যাচারিত হয়, যে দেশে তারা কাজের জন্য যায় সেখানেও তারা অবহেলিত, অত্যাচারিত।  এই অবহেলার কারণ হচ্ছে, এই বিষয়গুলো দেখার জন্য যে নীতিমালা সেই নীতিমালা তৈরিতে  এই সেক্টরের সব স্টেক হোল্ডারকে রাখা হয়নি।  রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতিনিধিদের রাখা হয়নি, ট্রেনিং সেন্টারের প্রতিনিধিদের রাখা হয়নি, প্রবাসে যারা কাজ করে সেই কর্মীদের প্রতিনিধি রাখা হয়নি। ফলে এই নীতিমালা কোনভাবেই সার্বিক হতে পারে না।’

আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সরকার বাহাদুররা পদে পদে রেমিট্যান্স নিয়ে গর্ব করেন। অথচ কর্মীদের কি ধরনের সুযোগ সুবিধা দিচ্ছি, কিভাবে পাঠাচ্ছি, যেসব দেশে যাচ্ছে ওই সব দেশে তারা কি সুবিধা পাচ্ছে তা নিয়ে কোন সরকারের কাজ নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর এই নিয়ে সুস্পষ্ট কোন বক্তব্য নেই। দেড় কোটি শ্রমিক নিয়ে তাদের কোন চিন্তা-ভাবনা নাই। কারণ তারা ভোটার নয়। ১৮ বছর থেকে আমরা বলে আসছি এই সেক্টরে একটা জাদুকরি পরিবর্তন হবে তাদের যদি ভেটার করা যায়।  রাজনৈতিক দলগুলো তখন তাদের স্বার্থে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করবে। রিক্রুটিং এজিন্সিগুলো ভালো সার্ভিস দেবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রস্তাবিত সংস্কার কর্মসূচিতে ৮টা প্রস্তাব করেছি। মালয়েশিয়ায় যেতে সরকারিভাবে ৭৯ হাজার টাকা লাগে, সৌদি আরব যেতে ৮৫ হাজার টাকা লাগে। আমরা রাবিড থেকে বলেছি, কোন টাকাই লাগবে না। আগেও টাকা ছাড়া গেছে, ভবিষ্যতেও যাবে। কেবল গৃহকর্মীর কথা বলছি না, গৃহকর্মীর ক্ষেত্রে  ৩ লাখ টাকা পেতো রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। পুরুষ কর্মীদের ডিমান্ড বেশি হওয়ায় আমরা পুরুষ কর্মীর ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ পাবো।  ডিজিটাল অনলাইন না থাকায় রিসিভিং কান্ট্রিতে যে মিডলম্যান আছে, তারা সার্ভিস ভালো দেয়, তবে তারা একটা চার্জ নেয়। তাদের হাতবদল হতে হতে ভিসা যখন রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে আসে এবং গ্রামে যায় বিশাল অংকের একটা ভিসা ট্রেটিং হয়। তখন ভিসার খরচ চার পাঁচ ছয় লাখ টাকা হয়ে যায়। এই ব্যবস্থা বন্ধে রাবিড সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইন সিস্টেম চালু করতে কাজ করছে। আমরা লিখিত ভাবে যে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি সেখানে এই বিষয় তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি, কর্মী প্রেরণকারী সংস্থা এবং রিক্রুটিং এজেন্সি মিলে মিডলম্যান ছাড়া অনলাইনে বিনা খরছে কর্মী পাঠানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে আমাদের বক্তব্য হবে আমরা  বিনা খরচে লোক পাঠাবো।   

রাবিড সভাপতি আরিফুর রহমান বলেন, ‘ইউরোপে ৮০ লাখ থেকে এক কোটি চাহিদা আছে। দেশগুলোর এম্বাসি বাংলাদেশে নেই, এই কাজগুলোর জন্য দিল্লি যেতে হয়। রাবিডের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে বলেছি ইউরোপের দেশগুলোর এম্বাসি আমাদের দেশে চালু করতে হবে। আমাদের সরকার এই ব্যাপারে আন্তরিক। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা  ২৮ জন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
ইউরোপের অনেক দেশে আমাদের বিরাট সংখ্যক কর্মী ইলিগ্যাল হয়ে আছে। আমরা দাবি করছি তাদেরকে লিগ্যাল করতে হবে। আর একটা সমস্যা হচ্ছে ইউরোপ যাওয়ার পর আমাদের কর্মীরা পালিয়ে যায়। এর ফলে আমাদের ভিসা রেশিও কমে যায়। এই বিষয়ে মোটিভেশনাল কাজ সবাইকে নিয়ে করতে পারি।’

তিনি বলেন,‘আমাদের এখান থেকে কেন তারা লোক নেবে? আমাদের কর্মীরা ভাষা জানে না। ইউরোপের বাজার ধরতে হলে আমাদের ইংরেজি জানতে হবে। এই ভাষা জানার কারণে গত বছর ভারত থেকে সাড়ে চার লাখ লোক গেছে কানাডায়, সেখানে আমরা সাড়ে চারশও পাঠাতে পারিনি। বহু ভাষার দেশ ভারত কিন্তু তারা ইংরেজি ভালো জানে। অন্যান্য দেশে সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুল থেকে চালু আছে। তাদের রাষ্ট্র ভাষা ছাড়াও তারা আরো কয়েকটি ভাষা শিখতে পারে। আমরা স্কুল কলেজে মাতৃভাষার পাশাপাশি ইংরেজিসহ কয়েকটি ভাষা শেখানোর কথা বলে আসছি অনেক দিন থেকে।  
যারা জাপানি ভাষা শিখে জাপান যায় তাদের ন্যূনতম সেলারি হচ্ছে দেড় লাখ টাকা। আমাদের এখানে মাস্টার্স পাস করে দেড় লাখ টাকার সেলারি পাওয়া দূরের কথা চাকরিও তো পায় না। আমাদের এখানে ভাষা শিখতে বললে শিখতে চায় না। আমরা আগেও বলেছি, শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে বিভিন্ন ভাষা শেখার বিষয়টা চালু করতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘ইউরোপের যে এখন এক কোটি লোকের ডিমান্ড আছে সেটা কি আমরা পূরণ করতে পারবো? আমাদের পাইপ লাইনে সেই দক্ষ লোক কিন্তু নাই। স্কুল কলেজে যদি সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ অনুমোদন দেওয়া হয় তা হলে একটু আগাতে পারি।
 আমরা বলেছি,  ইউরোপের বাজার ধরতে হলে আমাদের কোন একটা বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এখানে অনেকগুলো ট্রেনিং সেন্টার আছে। কিন্তু সেখান থেকে কর্মী নেয় না নিয়োকারী প্রতিষ্ঠান। আমাদের রাবিডের একটা আছে। আমরা চাইছি সেটাকে আন্তর্জাতিক মানের করার জন্য।  বিএমইটিতে অসংখ্য ট্রেনিং সেন্টার আছে কিন্তু ওই সেন্টারগুলো থেকে কোন লোক নেয় না। নিজেদের মতো করে ট্রেনিং দিলে তো হবে না। নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান যে ধরনের দক্ষ লোক চায় তা তৈরি করার জন্য সিলেবাস নেই, সেই ধরনের ট্রেনিং নেই। তাদের চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনিং দিতে হবে।
এখানে বিভিন্ন সেক্টরে যে দক্ষ লোক আছে সেটা বাইরের লোক জানে না। আমরা রাবিডের পক্ষ থেকে দেশের ট্রেনিং  সেন্টারগুলোকে অনলাইনে একটা ফ্লাটফরমে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এতে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানতে পারবে সারাদেশে কোন ক্যাটাগরিতে কতো লোক দক্ষ আছে। অনেকের কাছে ভালো কেয়ারগিভারের লোক আছে, কিন্তু ডিমান্ড পাচ্ছে না। অন্যদিকে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো ভালো কেয়ারগিভারের লোক পাচ্ছে না। এর জন্য একটা ফ্লাটফরম দরকার। ’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দুঃখের মূল কথা হচ্ছে বিভিন্ন দেশে যে এম্বাসি আছে সেগুলোর সক্ষমতা নাই। ধরেন সৌদি আরবে ফিলিপাইনের ২০ হাজার কর্মী আছে সেখানে তাদের এম্বাসির জনবল আছে ৮৭  জন আর ২৫ থেকে ৩৫ লাখ কর্মী আছে আমাদের, সেখানে ২০ জন লোকও নাই আমাদের এম্বাসির।   কোন সরকার কর্মীদের দেখাশুনার জন্য সেভাবে দক্ষ জনবল নিয়োগ করে না। যতো দোষ আছে সবটাই রিক্রুটিং এজেন্সির উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। অথচ এম্বাসিগুলোর দায় আছে, তারা যখন এটাস্টেশন করে তখন তাদের দায় আছে ওই  কোম্পানি কাজ দিচ্ছে কি না সেটা দেখার। তারা সে কাজটা না করে রিক্রুটিং এজন্সি এমনকি কর্মীদের ওপর দায়টা চাপিয়ে দেয়।  তিনি বলেন, ফিমেইল মাইগ্রেশনের মাধ্যমে অর্থনীতিকে পাল্টে দেওয়া সম্ভব।
আমরা ইনক্লুসিভ বাংলাদেশের কথা বলছি। আমরা বলছি, ইনক্লুসিভ ইকোনোমি ছাড়া ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ সম্ভব নয়। এর জন্য মাইগ্রেশন সেক্টরকে গুরুত্ব দিতে হবে। ’




-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
[email protected]

জাতীয় বিভাগের অন্যান্য খবর

Follow Us

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
খোকন দাস

সম্পাদক মন্ডলি
সৈয়দা পারভীন আক্তার
ফকরুদ্দীন কবীর আতিক
মোঃ ইলিয়াস হোসেন
মোঃ শাহাদাত হোসেন

পরিচালক মন্ডলি
ছিদ্দিকুর রহমান ভুঞ্রা (পরিচালক, ফিন্যান্স)
মোস্তাফিজুর রহমান (পরিচালক, পাবলিকেশন)
শান্ত দেব সাহা (পরিচালক, এইচ আর)
শাহরিয়ার হোসেন (পরিচালক, মার্কেটিং)

বার্তা সম্পাদক
মোঃ হাবীবুল্লাহ্

সিনিয়র রিপোর্টার
মোঃ জাকির হোসেন পাটওয়ারী

ভারপ্রাপ্ত প্রকাশক, আরিফুর রহমান কর্তৃক
ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৩২ ৪১৭ ৫১৭
Email: [email protected]

©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || ProbasonNews.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম গণঅভ্যুত্থানের পরে নব রূপায়নে মঞ্চে আসছে অতঃপর প্রণয় শিরোনাম ‘আমাদের সাকসেসগুলো মিডিয়ায় আসে না ’ শিরোনাম আমাদের অর্থনীতির মিরাকল হচ্ছে অভিবাসী শ্রমিকরা শিরোনাম অনলাইন ব্যবস্থায় বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে রাবিড কাজ করছে শিরোনাম ভোটার না হওয়া পর্যন্ত প্রবাসীরা অবহেলিত থেকে যাবে শিরোনাম চারণ সাংবাদিক রতন সরকার স্মৃতি সম্মাননা পাচ্ছেন যারা