ছবি প্রবাসন নিউজ
প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াত ও অবস্থান সীমিত করতে সরকার যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করেছে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)। একইসঙ্গে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে বিকল্প পথ তৈরি করা, ট্যুর অপারেটর সেবার উপর মূসক প্রত্যাহার, সারাবছর সুন্দরবনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল চালু রাখা, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও পর্যটকদের পারমিশন গ্রহণ সহজ করার দাবি জানানো হয়।
টোয়াব নেতারা বলেন,‘ট্যুর অপারেটরদের নিবন্ধন সংক্রান্ত সরকারের নতুন গেজেটে যেসব বিধিনিষেধ ও নীতিমালা রয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিধিমালায় ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) লাইসেন্স আবেদনের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা নিবন্ধন সনদ ফি, ১০ লাখ টাকা ব্যাংক স্থিতির সর্টিফিকেট ও তিন লাখ টাকা জামানত প্রদানের কথা বলা হয়েছে, যা ট্যুর অপারেটরদের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব হবে না।’
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর, ২০২৪) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম অডিটোরিয়ামে পর্যটন শিল্পের শীর্ষ স্থানীয় সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে টোয়াব নেতারা এইসব দাবি জানান।
চলতি সপ্তাহে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে চার মাস পর্যটকদের যাতাযাত ও অবস্থান সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই বিষয়ে টোয়াব এর প্রেসিডেন্ট মো: রাফেউজ্জামান বলেন, ‘আমাদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন ও পর্যটক যাতাযাত সীমিত করার সিন্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে সেন্টমার্টিনে কোন পর্যটক রাত্রীযাপন করতে পারবে না। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দিনে সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক ভ্রমণ করতে পারবেন ও রাত্রীযাপন করতে পারবেন। আর ফেব্রুয়ারি মাসে সরকার সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাওয়া বন্ধ রাখবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য। এতে করে পর্যটন শিল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে, উদ্যোক্তারা সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে। এই শিল্পের উপর নির্ভরশীল এই দ্বীপের লোকেরা বেকার হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা অক্টোবর থেকে মার্চ এই সময় পর্যটকদের সেবা দিতে চাই। এর জন্য সরকার যেসব বিধিনিষেধ মানতে বলবে সেসব মেনে চলবো।’
তিনি বলেন, ‘ট্যুর অপারেটর সেবার উপর ১৫ শতাংশ মূসক ধার্য করার কারণে প্যাকেজ মূল্য তথা ট্রাভেল কস্ট বেড়ে যাচ্ছে। এতে করে এই সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো: রাফেউজ্জামান বলেন, ‘অন্যান্য শিল্পের সঙ্গে প্রকৃতির সম্পর্ক সাংঘর্ষিক, অথচ ট্যুরিজম ব্যবসা প্রকৃতিকে, জীববৈচিত্র্যকে সুরক্ষা করে। এই সেক্টরের ব্যবসাই হচ্ছে প্রকৃতিকে নিয়ে, তাই প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য তাদের হাতেই সুরক্ষিত হতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘পর্যটন ব্যবসা কমিউনিটি বেজড ব্যবসা, হোটেল রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন সেক্টরকে যুক্ত করে এই ব্যবসা পরিচালিত হয়। সেন্টমার্টিনের ১০ হাজার মানুষ পর্যটন শিল্পের উপর নিভরশীল। পর্যটন ব্যবসার কারণে সেন্টমার্টিনে মানুষের জীবন-যাত্রাই পাল্টে গেছে, সেখানে শিক্ষার হার বেড়েছে, বাল্যবিবাহ কমেছে, চোরাকারবারি কমেছে, কোরাল কর্তন কমেছে।’
সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোটের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের গভর্নিং বডির সদস্য শিবলুল আজম কোরেশী বলেন,‘প্রকৃতি রক্ষার নামে মানুষের জীবন বিপন্ন করা যাবে না, প্রকৃতি ও মানুষের জীবন পাশাপাশি চলতে দিতে হবে। উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্লাস্টিক ব্যবহার শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা যায়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধমে দূষণ কমানো যায়, সোলারের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে জেনারেটরের বিকট শব্দ দূষণ দূর করা যায়, কিন্তু ব্যবসা বন্ধ করা যায় না।’
টোয়াব নেতা খবিরউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের ১০ হাজার মানুষ এই শিল্পের উপর নির্ভরশীল, দেশি বিদেশি পর্যটক এই দ্বীপ পছন্দ করে, সারকারের উচিত তাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়া।’
বুয়েটে অধ্যয়নরত সেন্টমার্টিনের ছাত্র আয়াজ উদ্দিন বলেন,‘পর্যটন শিল্পের কারণে সেন্টমার্টিনের মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন হয়েছে, আমি বুয়েটে পড়তে পারতাম না যদি এই পরিবর্তন না হতো। অনেকে স্কুল কলেজে পড়ালেখা করছে, তারা পড়ালেখা করতে পারতো না।’
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, টোয়াব পরিচালক (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন) মোহাম্মদ ইউনুছ।
সংবাদ সম্মেলনে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) এর নেতৃবৃন্দ, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের নেতৃবৃন্দ, সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের নেতৃবৃন্দ, ই-ট্যুরিজম এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ট্যাব) এর নেতৃবৃন্দ, সেন্টমার্টিন দোকান মালিক সমিটির নেতৃবৃন্দ, সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিটির নেতৃবৃন্দ, বোট মালিক সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ, মৎসজীবী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ স্লিপার এসি বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কুয়াব) এর নেতবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
খোকন দাস
সম্পাদক মন্ডলি
সৈয়দা পারভীন আক্তার
ফকরুদ্দীন কবীর আতিক
মোঃ ইলিয়াস হোসেন
মোঃ শাহাদাত হোসেন
পরিচালক মন্ডলি
ছিদ্দিকুর রহমান ভুঞ্রা (পরিচালক, ফিন্যান্স)
মোস্তাফিজুর রহমান (পরিচালক, পাবলিকেশন)
শান্ত দেব সাহা (পরিচালক, এইচ আর)
শাহরিয়ার হোসেন (পরিচালক, মার্কেটিং)
বার্তা সম্পাদক
মোঃ হাবীবুল্লাহ্
সিনিয়র রিপোর্টার
মোঃ জাকির হোসেন পাটওয়ারী
ভারপ্রাপ্ত প্রকাশক, আরিফুর রহমান কর্তৃক
ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৩২ ৪১৭ ৫১৭
Email: [email protected]
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || ProbasonNews.com