ঢাকা, বাংলাদেশ ১১ এপ্রিল, ২০২৫

অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের প্রতিবেদন

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বৈদেশিক সাহায্য নির্ভরতা কমিয়েছে রেমিট্যান্স

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বৈদেশিক  সাহায্য নির্ভরতা কমিয়েছে রেমিট্যান্স

ফাইল ছবি

Publish : 04:55 AM, 27 February 2025.
প্রবাসন প্রতিবেদন :

বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু দেশের দেশের বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরতা কমাতে ভূমিকা রেখেছে রেমিট্যান্স। রেমিট্যান্স আহরণের দিকে থেকে সবার শীর্ষে রয়েছে ভারত, এই রেমিট্যান্স প্রবাহ দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বিরাট ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে ব্যাপক অর্থ পাচার ও রাজনৈতিক অস্থিরতার পরও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির মূলে রয়েছে রেমিট্যান্স।  

অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে বিষয়টা তুলে ধরেছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির মতে, উন্নয়নের উৎস অনেক। সরকারি উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ) উন্নয়নে গুরুত্ব রাখে, এর জন্য কার্যকর শাসনব্যবস্থা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। 

সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) অবশ্যই অপরিহার্য, তবে বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার  দেশগুলোতে প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো অর্থের (রেমিট্যান্স) পরিমাণ এখন ওডিএ ও এফডিআই এর সম্মিলিত পরিমাণের চেয়েও বেশি!

 বিশে^ রেমিট্যান্স প্রবাহের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে ভারত; দেশটি ২০২৪ সালে ১২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে।  যেখানে পাকিস্তান ৩৬ বিলিয়ন ডলার ও বাংলাদেশ ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে যথাক্রমে পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। তবে জিডিপির অনুপাতে হিসাব করলে, রেমিট্যান্স প্রবাহে নেপাল বিশ্বে ষষ্ঠ। দেশটির রেমিট্যান্সের পরিমাণ মোট জিডিপির ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো রেমিট্যান্স থেকে যে বিপুল অর্থ আয় করে, তার অর্থ হচ্ছে তাদের বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনে এবং দাতাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রভাব থেকে কিছুটা সুরক্ষা দেয়। 

অর্থনীতিবিদেরা দীর্ঘমেয়াদে বৈদেশিক সাহায্য রেমিট্যান্সের মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক চিহ্নিত করেছেন সম্প্রতি, তাঁরা  দেখেছেন, বিদেশি সাহায্য ও রেমিট্যান্স একে অপরের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ, একটির প্রবৃদ্ধি আরেকটির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেয়।  

তবে এটা ঠিক যে, রেমিট্যান্স সব রোগ সারানোর মেডিসিন নয়; তার প্রমাণ পাওয়া যায় নেপালের অভিজ্ঞতা থেকে। রেমিট্যান্সের অর্থ সামঞ্জস্যহীনভাবে ছেলেদের শিক্ষার জন্য ব্যয় করা হয়েছে  মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। প্রবাসীদের অর্থ পাঠানোর ব্যয় নিয়েও সমালোচনা আছে বিশ্বব্যাংক ও অভিবাসী অধিকার সংরক্ষণকারী সংগঠনগুলোর তরফে।  ২০২৪ সালে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ও মানিগ্রামের মতো বৈশ্বিক অর্থ স্থানান্তরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে রেমিট্যান্সের মোট অর্থের ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ কেটে নিয়েছে।

১৯৯০ সাল থেকে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রতি বছর ‘মানব উন্নয়ন’ বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। এই প্রতিবেদন তাদের নির্ধারিত ‘মানব উন্নয়ন সূচক’ (এইচডিআই) অনুযায়ী পরিমাপ করা হয়।

তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মানব উন্নয়নের স্তর এক রকম নয়। এ ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। বর্তমানে দেশটি ১৯২টি দেশের মধ্যে ৭৮তম অবস্থানে আছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের অগ্রগতি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হলেও বাংলাদেশ এই সূচকে ভারতের চেয়ে বেশ এগিয়ে। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল এই তিনটি দেশ জাতিসংঘের  শ্রেণি বিন্যাস অনুযায়ী ‘মাঝারি মানব উন্নয়ন’ স্তরে। এ অঞ্চলে পাকিস্তান সবচেয়ে পিছিয়ে। দেশটি বর্তমানে বিশ্বে ১৬৪তম অবস্থানে রয়েছে এবং জাতিসংঘের মতে, ‘নিম্ন মানব উন্নয়ন’ স্তরে পড়েছে। পাকিস্তানের এ দুর্বল অবস্থান আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে যখন দেখা যায়, গত বিশ বছরে দেশটি মার্কিন সরকারের কাছ থেকে সরাসরি ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা পেয়েছে। এটি আরও নিশ্চিত করে যে, বৈদেশিক সহায়তা ও উন্নয়নের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত জটিল।

গবেষণা সংস্থাটি বিদেশি সাহায্য ও উন্নয়নের বহুমুখী সম্পর্ক তুলে ধরে ধরার দক্ষিণ এশিয়ার পাঁচটি প্রধান দেশের প্রধান সূচকগুলো তুলে ধরে। 

 জিডিপির শতাংশ হিসেবে সরকারি উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ) এবং মাথা পিছু সরকারি উন্নয়ন সহায়তা উভয়ই ‘সহায়তা নির্ভরতা’ পরিমাপের সূচক। এই নির্ভরতা সুশাসনকে দুর্বল করতে পারে এবং উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ ও নেপাল সহায়তা নির্ভরতার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। তবে সহায়তা নির্ভরতাই একমাত্র বিবেচ্য বিষয় নয়; দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুর্নীতির পরও উভয় দেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।

অন্যদিকে ভারত খুবই সামান্য সরকারি উন্নয়ন সহায়তা গ্রহণ করে, যা দেশটির শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবস্থানের প্রতিফলন। বাস্তবিক অর্থে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত নিজেই সরকারি উন্নয়ন সহায়তার দাতা হয়ে উঠেছে।

ভারতের অর্থনীতি দ্রুত বড় হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের অনুমান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে দেশটির প্রবৃদ্ধি হবে ৭ শতাংশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৭ সালে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে এবং জাপান ও জার্মানিকে ছাড়িয়ে যাবে। যদিও এই সমৃদ্ধির সুফল  দেশটির জনগণ সমানভাবে পাচ্ছে না। 

দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নয়নের অনেক সফল উদাহরণ রয়েছে। শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভারতের  কেরালায় উন্নয়নের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। অথচ ভারতের অধিকাংশ অঞ্চল বিপুল হারে জিডিপি বৃদ্ধির পরও পিছিয়ে আছে। অপরদিকে, পাকিস্তানের উন্নয়ন এখনো স্থবির।

সূত্র: অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য ম্যান্ডারিন   

 

-- বিজ্ঞাপন --
CONTACT
[email protected]

জাতীয় বিভাগের অন্যান্য খবর

Follow Us

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
খোকন দাস

সম্পাদক মন্ডলি
সৈয়দা পারভীন আক্তার
ফকরুদ্দীন কবীর আতিক
মোঃ ইলিয়াস হোসেন
মোঃ শাহাদাত হোসেন

পরিচালক মন্ডলি
ছিদ্দিকুর রহমান ভুঞ্রা (পরিচালক, ফিন্যান্স)
মোস্তাফিজুর রহমান (পরিচালক, পাবলিকেশন)
শান্ত দেব সাহা (পরিচালক, এইচ আর)
শাহরিয়ার হোসেন (পরিচালক, মার্কেটিং)

বার্তা সম্পাদক
মোঃ হাবীবুল্লাহ্

সিনিয়র রিপোর্টার
মোঃ জাকির হোসেন পাটওয়ারী

ভারপ্রাপ্ত প্রকাশক, আরিফুর রহমান কর্তৃক
ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৩২ ৪১৭ ৫১৭
Email: [email protected]

©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || ProbasonNews.com

Develop by _ DigitalSolutions.Ltd
শিরোনাম আরো কর্মী নিতে সৌদি রাষ্ট্রদূতকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান শিরোনাম পর্তুগাল: রেসিডেন্স পারমিটে বিলম্বের প্রতিবাদে অভিবাসীদের বিক্ষোভ শিরোনাম ভোটের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিচ্ছে ইসি শিরোনাম মার্চে রেমিট্যান্স এসেছে ৩.২৯ বিলিয়ন ডলার : দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ শিরোনাম বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সৌদি আরব শিরোনাম ২০ কর্মদিবসের মধ্যে ওয়ার্ক ভিসার প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা পর্তুগালের