প্রবাসন নিউজ
ব্রুনাইয়ের শ্রমবাজার সকল রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বায়রার সদস্যরা। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বেলা ১১টায় বিএমইটির সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বায়রার সদস্যরা এই দাবি জানান।
নেতারা বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো ব্রুনাইয়ের শ্রমবাজার তৈরি করলেও সরকার দেশটিতে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে বোয়েসেলকে এককভাবে অনুমোদন দিয়েছে। তারা বিগত এক বছরে কর্মী পাঠিয়েছে মাত্র দুইশ’ জন। অথচ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকলে কর্মী যেতো দশ হাজারের উপরে। ব্রুনাইয়ের মতো সম্ভাবনাময় শ্রমবাজারে কর্মী প্রেরণের মতো দক্ষতা ও সক্ষমতা বোয়েসেলের নেই। এতে করে এই শ্রমবাজারটা নষ্ট হচ্ছে, এই বাজার চলে যাচ্ছে প্রতিবেশি দেশগুলোর কাছে। অন্যদিকে আমাদের দেশ রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’
তারা বলেন, ‘একের পর এক শ্রমবাজার নিয়ে ষঢ়যন্ত্র হচ্ছে। বন্ধ হতে হতে এখন সৌদি আরবের শ্রমবাজারে এসে ঠেকেছে। এখন এই শ্রমবাজার নিয়েও চক্রান্ত চলছে।’
মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, ব্রুনাই রিক্রুটমেন্ট এজেন্সিস এসোসিয়েশনের সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার তালুকদার, বায়রার ইসি কমিটির সদস্য আরিফুর রহমান, মো. আমির হোসাইন ভূঞা, আহমেদ উল্লাহ বাচ্চু প্রমুখ।
ইকরাম চৌধুরী বলেন, ‘এককভাবে বোয়েসেলকে যদি কর্মী প্রেরণের সুযোগ দেয় তা হলে রিক্রুটিং এসেন্সিগুলোকে সরকার অনুমোদন দিয়েছে কেন? রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো কষ্ট করে শ্রমবাজার তৈরি করার পর সেগুলোতে কর্মী পাঠানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় বোয়েসেলকে। একটা দেশে কর্মী প্রেরণে এককভাবে একটা প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া মেনে নেওয়া যায় না। এটাকে বলা হচ্ছে জি-টু-জি, আমরা বলছি এটাও এক ধরনের সিন্ডিকেশন।’
তিনি বলেন,‘তারা বলছেন ৪০ হাজার টাকায় লোক পাঠাচ্ছেন, আমাদের কাছে প্রমাণ আছে ৪০ হাজার টাকার আড়ালে আসলে ৫/৬ লাখ টাকা নেওয়া হচ্ছে। দূতাবাসের একশ্রেণির কর্মকর্তা কর্মচারী এবং মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে সিলেকটিভ লোক পাঠানো হচ্ছে এবং এই টাকা নিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যেখানে বছরে পনের বিশ হাজার কর্মী পাঠানোর সক্ষমতা রাখি সেখানে এক বছরে বোয়েসেল মাত্র ১৭০ জন কর্মী পাঠিয়েছে। এতে করে তারা দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করছে। ব্রুনাই অত্যন্ত সম্ভাবনাময় দেশ, অথচ বোয়েসেলকে এককভাবে কর্মী পাঠানোর অনুমোদন দিয়ে এই মার্কেটটা ধ্বংস করা হচ্ছে।’
আরিফুর রহমান বলেন,‘আমাদের জনশক্তি প্রেরণ খাত এখন ক্রান্তিকালে পৌঁছে গেছে। আমাদেরকে সরকার ব্যবসা করার জন্য লাইসেন্স দিয়েছে বিপুল অংকের টাকা জামানত রেখে, ব্যবসা করবে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। বোয়েসেল এখন নিজেই ব্যবসায় নেমে গেছে। ব্রুনাই কেবল প্রথম নয়, যখনই দেখে কোন একটা দেশে সুন্দরভাবে লোক যাচ্ছে তখনই সরকারের কিছু দুর্নীতিবাজ লোক বোয়েসেলের মাধ্যমে লোক পাঠায়। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সারা দেশে থেকে কর্মী পাঠাতে পারে কিন্তু বোয়েসেলের সেই নেটওয়ার্ক নেই। বলা হচ্ছে বোয়েসেলের মাধ্যমে কম টাকায় পাঠানো হচ্ছে, বাস্তবে এটা সত্য নয়, বাস্তবে আন্ডার টেবিলে অনেক বেশি টাকা নেয় তারা। আমরা মনে করি ব্রুনাইসহ শ্রমবাজারে সকল সিন্ডিকেশন বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন.‘ সৌদি আরব একটা বড় শ্রমবাজার। শিংহভাগ কর্মী সৌদি আরবে যায়, সত্যায়নের নামে, সার্টিফিকেশনের নামে লোক যেতে দিচ্ছে না। সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছে এই সমস্যা সমাধান করে দেবে। কিন্তু এখনও করছে না। বাংলাদেশের যে পরিবর্তন সেই পরিবর্তনে জনশক্তি রফতানি খাত ভূমিকা রেখে আসছে, এই সেক্টর ধ্বংস করার জন্য আমাদের কিছু আমলা, আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারত চক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, ইউরোপও অনেক বড় বাজার, সে বাজারও স্থবির অবস্থায় আছে। যারা এই দেশ চালাচ্ছেন, এই মন্ত্রণালয় যারা চালাচ্ছেন তারা এইসব বিষয়ে ওয়াকিবহাল নন। যে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো হাজার হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স আনছে তাদের সহযোগিতা না করে পদে পদে তাদের বাধাগ্রস্ত করে আসছে। এমন একটা জনশক্তি নীতিমালা তৈরি করতে হবে যা আসলে কর্মী বান্ধব, ব্যবসা বান্ধব, অভিবাসন বান্ধব। যেখানে দরকার অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে দেওয়া, সময় কমিয়ে দেওয়া। সেগুলো না করে প্রসেসিং টাইম বাড়াচ্ছে, অভিবাসন ব্যয় বাড়াচ্ছে, ম্যানপাওয়ার দিচ্ছে না। অবিলম্বে এইসব অনিয়ম দূর করতে হবে।’
মো. আমির হোসাইন ভূঞা টিপু বলেন, ‘বিগত সময়ে আমরা সাধারণ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা বিভিন্ন মার্কেটে সিন্ডিকেটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। দেখেন বোয়েসেল নামক একটা প্রতিষ্ঠান এককভাবে কর্মী পাঠাচ্ছে, এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বোয়েসেলের বিরুদ্ধে নয়, আমরা বলছি আমাদেরও কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। আমরা লোক পাঠালে এক বছরে দশ হাজার লোক পাঠাতে পারতাম, অথচ বোয়েসেল মাত্র ১৯৫ জন লোক পাঠিয়েছে। এতে কার লাভ হলো?’
তিনি বলেন,‘ সৌদি আরবের শ্রমবাজার থেকে আমাদের হঠানোর জন্য একটা গোষ্ঠী চক্রান্ত করছেন।’
আহমেদ উল্লাহ বাচ্চু বলেন, ‘আমাদের অনেক দাবি। সৌদি আরবে এক থেকে ২৪ পর্যন্ত একক ভিসা ছিল, এখন বলা হচ্ছে একক ভিসা মানে একটি ভিসা। এতে করে হাজার হাজার ভিসা স্টাম্পিং করা আছে। ম্যানপাওয়ার না হওয়ার কারণে কর্মী পাঠাতে পারছি না। এতে আমরা ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার এতোগুলো লাইসেন্স দিয়েছে, আবার ব্রুনাইয়ের মতো একটা দেশে কাজ করতে দিচ্ছে না। আপনি তিন হাজার লাইসেন্সকে কাজ করতে দেবেন না, বোয়েসেলকে কাজ করতে দেবেন এটা তো হয় না। আগে এক থেকে ২৪টি ভিসাকে একক ভিসা হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হতো। বিএমইটি ও মন্ত্রণালয় আমাদেরকে চাপে রেখেছে।’
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
খোকন দাস
সম্পাদক মন্ডলি
সৈয়দা পারভীন আক্তার
ফকরুদ্দীন কবীর আতিক
মোঃ ইলিয়াস হোসেন
মোঃ শাহাদাত হোসেন
পরিচালক মন্ডলি
ছিদ্দিকুর রহমান ভুঞ্রা (পরিচালক, ফিন্যান্স)
মোস্তাফিজুর রহমান (পরিচালক, পাবলিকেশন)
শান্ত দেব সাহা (পরিচালক, এইচ আর)
শাহরিয়ার হোসেন (পরিচালক, মার্কেটিং)
বার্তা সম্পাদক
মোঃ হাবীবুল্লাহ্
সিনিয়র রিপোর্টার
মোঃ জাকির হোসেন পাটওয়ারী
ভারপ্রাপ্ত প্রকাশক, আরিফুর রহমান কর্তৃক
ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৩২ ৪১৭ ৫১৭
Email: [email protected]
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || ProbasonNews.com