ফাইল ছবি
বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কর্মীরা কাজে যোগ না দিয়ে অন্য দেশে চলে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের দূতাবাসকে সতর্ক করলেও কর্মী নেওয়া বন্ধ করেনি ক্রোয়েশিয়া।
কর্মীরা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য বিদেশি নাগরিকদের বাসস্থান এবং কাজের অনুমতি দেওয়ার আগে কাগজপত্র নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করছে বলে জানিয়েছে ক্রোয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় বলেছে এই প্রদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হচ্ছে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া বিদেশি নাগরিকরা যাতে কাজে নিয়োজিত থাকে এবং অন্য সদস্য রাষ্ট্রে পালিয়ে যেতে না পারে।
ক্রোয়েশিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি কর্মীদের একটা বড় অংশ অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের কর্মীরা ক্রোয়েশিয়ার ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে অন্যান্য শেনজেন কান্ট্রিতে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
হেগে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এই বিষয়ে অবগত করেছে। চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে ক্রোয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া বন্ধ করতে যাচ্ছে মর্মে জানানো হয়েছে। ২৩ জানুয়ারী দেওয়া চিঠিতে দূতাবাস জানিয়েছে বাংলাদেশি কর্মীরা ক্রোয়েশিয়ার ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে শেনজেন অঞ্চলের অন্যান্য দেশে চলে যাচ্ছেন বলে ক্রোয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালে ক্রোয়েশিয়ান সরকার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ১২ হাজার ওয়ার্ক পারমিট ও ভিসা ইস্যু করেছিল। এর মধ্যে ৮ হাজার কর্মী ক্রোয়েশিয়া পৌছায়নি, বাকী ৪ হাজার ৪০০ জনের মধ্যে বর্তমানে মাত্র ৫০শতাংশ কাজ করছেন।
এই অননুমোদিত অভিবাসনের সমালোচনা করে ক্রোয়েশিয়াকে এই ধরনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বর্তমানে ক্রোয়েশিয়ায় প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছে।
মন্ত্রণালয়ের মতে, বাংলাদেশের নাগরিকদের পাশাপাশি ভারত, নেপাল, ফিলিপাইন এবং মিশরের নাগরিকদের মধ্যে কাজের ভিসা ও পারমিটের অপব্যবহারের রেকর্ড রয়েছে।
এর মানে হচ্ছে বাংলাদেশের নাগরিকরা এখন কাজের উদ্দেশ্যে ক্রোয়েশিয়া পৌঁছতে চাইলে আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণের সম্মুখীন হবে।
মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে যে, যদি এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে একজন বিদেশি নাগরিক যিনি ভিসার জন্য আবেদন করেছেন এবং তিনি চুক্তির অপব্যবহার করবেন তখন তার আবেদনটি প্রত্যাখ্যান করা হবে।
রাবিডের সভাপতি আরিফুর রহমান বলেন, ‘কর্মী পালিয়ে যাওয়ার জন্য একক কোন কারণ দায়ী নয়। তাই এই সমাধানে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘উন্নত জীবন গঠনের জন্য কর্মীদের ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার এক ধরনের উচ্চাকাক্সক্ষা সবসময় থাকে, এটা একটা দিক। তবে কর্মীরা যে কাজে যাচ্ছে সেই কাজে যথাযথ দক্ষ না হওয়ায় কাজে টিকতে পারে না। পালিয়ে যাওয়ার এটা একটা বড় কারণ। তাই আমাদের কর্মীদের কোন একটা বিশেষ কাজে দক্ষ করে এবং ভাষা শিখিয়ে পাঠাতে হবে।
এ ছাড়া আমাদের মোটিভেশনেও ঘাটতি আছে। যে কর্মীটা দুই বছরের কাজের ভিসা নিয়ে একটা দেশে যাচ্ছে, কাজে যোগ না দিয়ে অন্য দেশে চলে গেলে নিয়োগকারী কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়, আমাদের ভিসা রেশিও কমে যায়, শেষ পর্যন্ত দেশের শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে যায়। এই বিষয়টা কর্মীদের বুঝাতে হবে। এটাও বুঝাতে হবে যে, চুক্তি ভঙ্গ করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
রাবিডের সাধারণ সম্পাদক মো.ছিদ্দিকুর রহমান ভূঞা বলেন,‘কর্মী পালিয়ে যাওয়ার কারণে আমাদের রোমানিয়ার শ্রমবাজার প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে, ক্রোয়েশিয়াও একই পথে হাঁটতে যাচ্ছে। একটা বাজার বন্ধ হলে সেটা পুনরায় চালু করা অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই এই বিষয়ে আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ দরকার।
এটা রোধে ‘পালিয়ে যাবে না’ মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি প্রথমে কর্মীদের কাছ থেকে, পরে অভিভাবকের কাছ থেকে, এর পর স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। এর পর দেড় থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত নেওয়া হয়েছে। এই রকম বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও সেভাবে কর্মী পালিয়ে যাওয়া কমেনি।’
তিনি বলেন, ‘এই সমস্যা মোকাবেলায় এই উদ্যোগগুলোর পাশাপাশি কর্মীদের দক্ষ করে গড়ে তোলাসহ সব ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে।’
আরিফুর রহমান বলেন, ‘অভিবাসন নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দ্বৈত নীতি বা মনোভাবের বিষয়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে কথা বলতে হবে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে একদিকে অভিবাসীদের প্রবেশের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিতে দেখা যায়, অন্যদিকে তাদের বিভিন্ন সেক্টরে যে বিপুল কর্মী দরকার সেই কর্মীও তারা নিতে চায়। এই দ্বৈত নীতিও এই ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করছে।’
এখানে উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ক্রেয়েশিয়া ৫৩,৪০০ টি ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করেছে ইইউ বহির্ভূত দেশের কর্মীদের জন্য।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
খোকন দাস
সম্পাদক মন্ডলি
সৈয়দা পারভীন আক্তার
ফকরুদ্দীন কবীর আতিক
মোঃ ইলিয়াস হোসেন
মোঃ শাহাদাত হোসেন
পরিচালক মন্ডলি
ছিদ্দিকুর রহমান ভুঞ্রা (পরিচালক, ফিন্যান্স)
মোস্তাফিজুর রহমান (পরিচালক, পাবলিকেশন)
শান্ত দেব সাহা (পরিচালক, এইচ আর)
শাহরিয়ার হোসেন (পরিচালক, মার্কেটিং)
বার্তা সম্পাদক
মোঃ হাবীবুল্লাহ্
সিনিয়র রিপোর্টার
মোঃ জাকির হোসেন পাটওয়ারী
ভারপ্রাপ্ত প্রকাশক, আরিফুর রহমান কর্তৃক
ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৩২ ৪১৭ ৫১৭
Email: [email protected]
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || ProbasonNews.com