প্রবাসন নিউজ
এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও এয়ারলাইন্স কর্তৃক যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়া বাল্ক টিকিট বিক্রয় ও মজুতদারি বন্ধের দাবি জানিয়েছে এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ -আটাবের নেতারা। বিদেশগামী শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের স্বস্তি দিতে বাল্ক টিকিট বিক্রি ও মজুদদারি বন্ধ, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণে বেবিচকসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন আটার সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ।
রাবিবার (২৬ জানুয়ারি ২০২৫) রাজধানীর এক হোটেলে আটাব আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান। এই সময় উপস্থিত ছিলেন আটাব মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ, সাবেক মহাসচিব জিন্নুর আহমেদ চৌধুরী দিপু, যুগ্মমহাসচিব আতিকুর রহমান, উপমহাসচিব তোয়াহা চৌধুরী, অর্থসচিব মো. সফিক উল্যাহ নান্টু।
আবদুস সালাম আরেফ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে চলমান অন্যতম বড় সমস্যা এয়ার টিকেটের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি। এই মূল্য বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে নামবিহীন গ্রুপ টিকেট বুকিং। কতিপয় মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইন্স তাদের পছন্দের কিছু সংখ্যক এজেন্সির নামে কোন প্রকার পাসপোর্ট, ভিসা, ভ্রমন নথি পত্র, এবং প্রবাসগামী শ্রমিকদের কোন প্রকার বৈদেশিক ওয়ার্ক পারমিট এমন কি যাত্রী তালিকা ছাড়াই শুধুমাত্র ইমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন রুটের গ্রুপ সিট ২/৩ মাস অগ্রীম তারিখের পিএনআর তৈরির মাধ্যমে সিট ব্লক করে রাখে। এভাবে টিকেট মজুতদারি করা হয় যার ফলে সিন্ডিকেট তৈরি হয়, আসন সংকট দেখা দেয়, টিকেট মূল্য ২০% থেকে ৫০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং বিদেশগামী শ্রমিক, স্টুডেন্ট, প্রবাসীরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।
এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও এয়ারলাইনস কর্তৃক যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়া বাল্ক টিকেট বিক্রয় ও মজুতদারি বন্ধে তিনি ১৫টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
১.সিডিউল ফ্লাইট বৃদ্ধি করা, অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার ব্যবস্থা করা, দ্রুত অনুমোদন দেওয়া ও ওপেন স্কাই ঘোষণা করা যেন সকল দেশের এয়ারলাইন্স যাত্রী পরিবহন করতে আগ্রহী হয়।
২.নাম, পাসপোর্ট নাম্বার, ভিসা, ম্যানপাওয়ার ক্লিয়ারেন্স ব্যতীত কোন বুকিং করা যাবে না, সিট ব্লকের মাধ্যমে ফ্লাইটের ইনভেন্টরি ব্লক হয়ে যায়, যে কারণে মূল্য বাড়তে থাকে। এছাড়া কোন ট্রাভেল এজেন্সির কাছে প্রকৃত চাহিদা না থাকলেও এয়ার লাইন্সের কাছে দুই লাইনের একটি ইমেইল করে কৃত্রিম ডিমান্ডের তৈরি করে। কৃত্রিম ডিমান্ডের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে এয়ারলাইন্সের এই পলিসির কারণে। ট্রাভেল এজেন্সিরা তার কাছে ডিমান্ড না থাকা সত্ত্বেও পণ্য মজুদ করার মতো এয়ার টিকেট মজুত করছে। এটা বন্ধ করতে হবে।
৩.বর্তমানে ৬০ (ষাট) হাজারেরও অধিক সিট এয়ারলাইন্সসমূহ ব্লক করে রেখেছে। এই সিটগুলি এখনই ওপেন করে দিলে উদ্ভূত সংকট দূর হয়ে যাবে।
৪. বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধান না করতে পারলে সমস্যা আরও প্রকট হবে এবং যাত্রী সাধারণ উচ্চ মূল্যে টিকেট ক্রয় করতে বাধ্য হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয় হতে অতি দ্রুত সমাধানের নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।
৫.এয়ারলাইন্সের ডিস্ট্রিবিউশন পলিসি ওপেন রাখতে হবে। জিডিএস/এনডিসিএ সিট সেল করার নির্দেশনা দিতে হবে এবং সকল এজেন্সিকে বিক্রয় করার সুযোগ দিতে হবে।
৬.বিভিন্ন রুটে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ভাড়া বাস্তব সম্মতভাবে নির্ধারণ করতে হবে।।
৭.এয়ারলাইন্স কর্তৃক হিডেন ফেয়ার এ গ্রুপ টিকেট / প্রাইভেট ফেয়ার এ টিকেট বিক্রয় বন্ধ করার নির্দেশনা।
৮. লেবার ফেয়ার নির্ধারণ করা।
৯.দশ থেকে বিশ হাজার সিট/ টিকেট দিয়ে দেয়া হয় কোন কোন এজেন্সির কাছে এর মাধ্যমেই সিন্ডিকেটের উৎপত্তি। এজেন্সি প্রতি সর্বোচ্চ সেল সিলিং নির্ধারণ করতে হবে।
১০.শ্রমিক ও ওমরাহ যাত্রীদের এয়ারলাইন্স ফরমেটে টিকেট প্রদান করতে হবে যেখানে ভাড়া, এজেন্সি বিবরণ উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। প্রকৃত মূল্য যাত্রীর দৃষ্টিতে আসবে। এর ফলে নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত দাম নিতে পারবে না। মূল্য উল্লেখ ছাড়া টিকেট দেয়া যাবে না।
১১.জিএসএ কর্তৃক ভাড়া বৃদ্ধি ও কাউন্টার সেল বন্ধ করা।
১২.১৯৮৪ সালের বেসামরিক বিমান চলাচল আইন ও বিধিমালা মেনে নিয়ন্ত্রণ করা।
১৩.বাজেট এয়ার লাইন্সগুলো অল্প টাকায় যাত্রী পরিবহন করার ঘোষণা দিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ থেকে তারা লিগ্যাছি ক্যারিয়ারের মতই বেশি দামে টিকেট বিক্রি করে। বাজেট ক্যারিয়ার সংক্রান্ত বিধিমালা আছে কি না দেখতে হবে, না থাকলে সেটাও তৈরি করতে হবে।
১৪.এয়ারলাইন্স পরিচালনার যে গাইড লাইন আছে সেখানে তাদের সেলস পদ্ধতি এবং মার্কেটিং পলিসি এদেশের জনগণের জন্য কোন রকমের নেগেটিভ ইম্প্যাক্ট না করে সে জন্য বিধিমালা প্রস্তুত করা।
১৫.বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, আটাব/জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)/ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়/ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)/ বাংলাদেশ ব্যাংক এর সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। তারা চাহিদা, ক্যাপাসিটি ও সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করবে, সমাধান করবেন। অসাধু ট্রাভেল এজেন্ট ও এয়ারলাইন্স স্টাফদের বিরুদ্বে অভিযোগ থাকলে তারা ব্যবস্থা নিবেন। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
খোকন দাস
সম্পাদক মন্ডলি
সৈয়দা পারভীন আক্তার
ফকরুদ্দীন কবীর আতিক
মোঃ ইলিয়াস হোসেন
মোঃ শাহাদাত হোসেন
পরিচালক মন্ডলি
ছিদ্দিকুর রহমান ভুঞ্রা (পরিচালক, ফিন্যান্স)
মোস্তাফিজুর রহমান (পরিচালক, পাবলিকেশন)
শান্ত দেব সাহা (পরিচালক, এইচ আর)
শাহরিয়ার হোসেন (পরিচালক, মার্কেটিং)
বার্তা সম্পাদক
মোঃ হাবীবুল্লাহ্
সিনিয়র রিপোর্টার
মোঃ জাকির হোসেন পাটওয়ারী
ভারপ্রাপ্ত প্রকাশক, আরিফুর রহমান কর্তৃক
ডা. নওয়াব আলী টাওয়ার, ২৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
ফোনঃ +৮৮ ০১৭৩২ ৪১৭ ৫১৭
Email: [email protected]
©২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত || ProbasonNews.com